শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫, ০৩:৪৩ অপরাহ্ন
গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধিঃ গোবিন্দগঞ্জে আলোচিত সাঁওতাল হত্যা মামলার চার্জশীট প্রদান করেছে গাইবান্ধা পিবিআই। চার্জশীটে ৯০ জনকে আসামী করা হয়েছে। এদিকে মামলার প্রধান আসামীকে বাদ দেয়ার প্রতিবাদে গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর সড়কের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে সাঁওতালরা। ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত আড়াই ঘন্টাব্যাপী এ সড়ক অবরোধে দুই পাশে শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে।
গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল পল্লীতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হত্যা মামলায় ৯০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল হাই সরকার।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আবদুল হাই সরকার জানান, সাঁওতাল পল্লীতে হামলার মামলা তদস্ত শেষে ৯০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছি। ঘটনার রহস্য উন্মোচন ও সঠিক তদস্ত শেষ করতে প্রায় আড়াই বছর সময় লেগেছে। সঠিক তদন্ত ও মূল আসামিদের আইনের আওতায় আনতেই চার্জশিট দাখিলে কিছুটা সময় বেশি লেগেছে।’
তিনি জানান, মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলার পাশাপাশি অভিযুক্তদের মধ্যে ২৫ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া, লুটপাট হওয়া বেশকিছু মালামালও উদ্ধার করা হয়েছে।
পিবিআই সূত্র জানায়, চার্জশিটে অভিযুক্ত ৯০ আসামির মধ্যে উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন মহিমাগঞ্জ সুগার মিলের (জিএম-অর্থ) নাজমুল হুদা, সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাকিল আহম্মেদ বুলবুল, ইউপি সদস্য শাহ আলম ও আইয়ুব আলী। ৯০ আসামির মধ্যে ২৫ জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হলেও তারা সবাই জামিনে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গোবিন্দগঞ্জের রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশের গুলিতে তিন সাঁওতাল মারা যান। এ সময় তাদের বসতঘরগুলো আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন সাঁওতালরা।
এদিকে মামলার প্রধান আসামীকে বাদ দেয়ার প্রতিবাদে গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর সড়কের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে সাঁওতালরা। বেলা ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘন্টা ব্যাপী এ সড়ক অবরোধে দুই শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। বেলা সাড়ে ৫টার দিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রকৌশলী আলহাজ্ব মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন, অফিসার ইনচার্জ একে এম মেহেদী হাসান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং আইননানুগ সুষ্ট সমাধানের আশ্বাস দিলে সাওঁতালরা অবরোধ তুলে নেয়। অবরোধ চলাকালে বক্তব্য রাখেন আদিবামী-বাঙ্গালী সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভ’মি উদ্ধার কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, সাধারন সম্পাদক জাফুরুল ইসলাম, সাংগঠনিক স্বপন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সুভল হেমব্রম প্রমুখ।